কলকাতা: বিস্তর বিতর্ক, মামলা-মকদ্দমা, অভিযোগ-পালটা অভিযোগের পরে বাংলা রাজ্য দাবা সংস্থা নির্বাচনে জয় পেল অতনু লাহিড়ী গোষ্ঠী।
তারাই ক্ষমতায় ছিলেন, কিন্তু আদালত থেকে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সাময়িকভাবে। কিন্তু বিরোধী গোষ্ঠীর হয়ে প্রধান মুখ প্রাক্তন গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া গোষ্ঠী কার্যত হেরে রণে ভেঙে দিয়েছেন।
এই নির্বাচনে দিব্যেন্দুকে ৯-১৪ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে সংস্থার সভাপতি পদে বসলেন অতনু লাহিড়ীর ছোট ভাই শান্তনু লাহিড়ী। অতনুও প্রাক্তন নামী দাবাড়ু, তিনি আইএম নর্মধারী ছিলেন।
এই নির্বাচন ঘিরে বহুদিন ধরে চাপানউতোর চলেছে। জাতীয় দাবা সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকরাও পরোক্ষে দিব্যেন্দুকে সমর্থন করছিলেন বাইরে থেকে।
কিন্তু অতনু ক্ষমতায় এলেন নিজের কৌশলে, তিনি যেভাবে ছক কষেছিলেন, সেখানেই হার হয়েছে বিরোধীদের।
জয়ের পরে KHEL UPDATES কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অতনু জানালেন, ‘‘এটা আমাদের সবদিক থেকেই ঐতিহাসিক জয়। কারণ আমাদের পিছনে পুলিস লাগিয়েছিল যাতে আমরা নির্বাচন না লড়তে পারি। সব প্রমাণ রয়েছে, আমি প্রেসকে সবই বলব।’’
শাসক গোষ্ঠীর পক্ষে পদাধিকারীরা হলেন : শান্তনু লাহিড়ী (সভাপতি), অমর রায় (কার্যকরি সভাপতি), অমিতাভ ঘোষ, তপন দাশগুপ্ত, উদয়নকান্তি ঘোষ, অনিরুদ্ধ বর্মণ, তন্ময় ঘড়ুই, নরেন্দ্র প্রসাদ (সবাই সহ-সভাপতি), দিলীপ রঞ্জন চক্রবর্তী (সাধারণ সচিব), দীপদ্যুতি সরকার, রাজেন্দ্র প্রসাদ নাগ, রতন ঘোষ, রুপেশ তামাঙ, সোহেল দত্ত, স্বপন বৈদ্য (সবাই সহ-সচিব) এবং অনির্বান হাজরা (কোষাধ্যক্ষ)।
রবিবার স্পেশাল অফিসারের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত রাজ্য দাবা সংস্থার নির্বাচন হয়েছে মধ্য কলকাতার আইসিসিআর কমপ্লেক্সে। এই নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়া বহুদিন আগে কোর্টের অধীনে চলে গিয়েছিল এবং শেষপর্যন্ত স্পেশাল অফিসার গোপীনাথ ঘোষের তত্ত্বাবধানে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হল।
নির্বাচনে প্রথম রাউন্ডে ২১ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। ২১টি জেলা সংস্থার তরফ থেকে ২১ জন প্রতিনিধি ভোট দেন। সেই ভোটের ভিত্তিতে ১৬ জনকে নির্বাচিত করা হয়। উল্লেখ্য যে, দাবা সংস্থার নির্বাচনে দুটো শিবিরের লড়াই হয়েছিল।
একদিকে শিবিরে ছিলেন অতনু ও শান্তনু। অন্যদিকের শিবিরে ছিল দিব্যেন্দুর কমিটির লোকজন। অতনুর বিপক্ষে মানহানির মামলাও করেছিলেন দিব্যেন্দু। তাঁর নামে অভিযোগ ছিল, তিনি সংস্থার চেয়ারের বলে দুর্নীতি করেছেন, টাকা নয়ছয় করেছেন। এই নিয়ে জাতীয় সংস্থা অবশ্য তদন্ত করে অতনুকে ক্লিনচিটও দিয়েছিল। কিন্তু তারপরেও বিতর্ক মেটেনি।
রাজ্য সংস্থার সংবিধান অনুসারে, নির্বাচিত ১৬ জনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের সদস্যের আরও ৭ জন পরের রাউন্ডে যুক্ত হন।
অর্থাৎ মূল ভোটারের সংখ্যা পরের রাউন্ডে গিয়ে দাঁড়ায় ২৩ জন। উল্লেখ্য যে, দ্বিতীয় রাউন্ডে যে নির্বাচন হয়, সেখানে বেশ কয়েকটি পদ, বিশেষত, সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক, কার্যনির্বাহী সম্পাদক প্রভৃতি পদগুলিতে কোনও নির্বাচন না হলেও সভাপতির ক্ষেত্রে কিন্তু সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যা মূলত ছিল শান্তনুর সঙ্গে দিব্যেন্দুর। নির্বাচনে শান্তনু জয়ী হিসেবে স্পেশাল অফিসার দ্বারা ঘোষিত হন।
এছাড়াও সাতটি যুগ্ম সম্পাদক পদেও নির্বাচন হয়, যাতে শান্তনুদের প্যানেলে থাকা অধিকাংশই প্রার্থী বিজয়ী হন।