কলকাতা: সামনের মরসুমে মোহনবাগান-এটিকে দলের কোচ কে হবেন, আন্তোনিও হাবাস না কিবু ভিকুনা?
মোহনবাগান এবং এটিকে এখন উভয়সঙ্কটে। দুই দলই দেশের দুটি ভিন্ন লিগে চ্যাম্পিয়ন। দুই দলের কোচও কর্তাদের কাছে নয়নের মনি। কিন্তু সামনের মরসুমে দুই দলই মিশে একটা দল হয়ে যাবে, সেই কারণে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।
মোহনবাগান এবং এটিকে-র সংযুক্তিকরণের পরে যে প্রশ্নটি অবধারিতভাবে উঠে আসে, সেটি হল আগামী মরশুমে ফুটবলার এবং কোচদের ভবিষ্যৎ কী হবে? কারণ, মোহনবাগান এবং এটিকে দুটি দলেরই সাফল্যের নেপথ্যেই রয়েছেন দুই স্প্যানিশ কোচ।
কিন্তু কাকে মূল কোচ করা হবে, সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এটিকে-কে দুইবার চ্যাম্পিয়নের নেপথ্যে রয়েছেন হাবাস।
তাঁর সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে এটিকে-র প্রধান অংশীদার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা জানিয়েছেন, ‘‘হাবাস আমাদের দলের হয়ে দারুণ কোচ করেছেন। তিনি গ্রেট কোচ, আমি জানি না আগামী মরসুমে কী হবে। সেটি ঠিক হবে আমাদের দুই দলের বোর্ড মিটিংয়ে। আমি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারব না।’’
এটিকে-র মালিক এও বলেন, ‘‘মোহনবাগান আমাদের দাদা ক্লাব, তাদের এবার আই লিগে ভাল কোচিং করিয়ে সাড়া ফেলেছেন ভিকুনা। তাই ওঁকেও আমার তরফ থেকে শ্রদ্ধা। কিন্তু কে কোচ থাকবেন, সেটি আমার বলা সাজে না।’’
হাবাসের কৌশলে এটিকে-র খেলা এবার উচ্চমার্গের হয়েছে। তাই কর্তাদেরও মন জয় করে নিয়েছেন তিনি।
সবথেকে বড় কথা, হাবাস আগে ছিলেন বদমেজাজী, সেই মেজাজও বদলে গিয়েছে তাঁর। হাবাস যেহেতু এটিকে-র কোচ, আর দুটি ক্লাবের সংযুক্তিকরণে এটিকে-র অংশীদারিত্ব বেশি, সেই কারণেই কোচ হওয়ার দৌড়ে ভিকুনার থেকে হাবাসই এগিয়ে।
যদিও এই প্রসঙ্গে মোহনবাগান ক্লাবের শীর্ষ কর্তা দেবাশিস দত্ত জানিয়েছেন, এটি একেবারেই অমূলক ধারণা। মোহনবাগান পাবলিক ক্লাব, তাদের সঙ্গে সমর্থকদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। আমরা এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেব না যেটি সমর্থকদের আবেগে আঘাত হানতে পারে। তাই এখনই এই নিয়ে আলোচনা কিছুই হয়নি আমাদের।’’
এদিকে, এটিকে এবার আইএসএলে চ্যাম্পিয়ন করার পরেই হাবাস জানিয়েছিলেন তিনি আগামী চুক্তির জন্য অপেক্ষা করে রয়েছেন। এও বলেন, ‘‘আমাকে যেভাবে এটিকে সমর্থকরা ভালবাসা দিয়েছে তাতে আবারও এই দলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারলে ভাল লাগবে। এই দলের প্রতি আমার বাড়তি দুর্বলতাও রয়েছে।’’
মোহনবাগান কোচ ভিকুনা যদিও এই নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি। তিনি সবুজ মেরুনকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন চার ম্যাচ আগেই। সেই জন্যই তাঁকেও সহজে ছাড়তে চাইবেন না কর্তারা। এই নিয়ে প্রাক্তন ফুটবলার দলের কর্তা সত্যজিৎ চ্যাটার্জি সোমবার বলেছেন, ‘‘কিবুর সঙ্গে আমরা এই ব্যাপারে এখনও কোনও কথা বলিনি। এখনও চার ম্যাচ বাকি রয়েছে। ২১ মার্চের পরে প্র্যাকটিস শুরু হবে। তারপর আমরা কথা বলতে চাই ওঁর সঙ্গে। কিবু কী চান, সেটিও আমাদের দেখতে হবে।’’
প্রশ্নটি যদিও অন্যত্র, এটিকে-মোহনবাগান মিলে যাওয়ায় দুই দলের কাদের নিয়ে দলগঠন হবে, সেটিও একটি প্রশ্ন।
তবে আলোচনা চলছে, দুটি দলের প্রথম ও দ্বিতীয় দুটি দল তৈরি রাখা হবে। একটি দল খেলবে হাতেগোনা কয়েকটি টুর্নামেন্ট, যেমন লিগ, শিল্ড, ডুরান্ড। এবং বাকি দলটি খেলবে প্রধান লিগ এবং এএফসি লিগ। সেরকম হলে কোনও ফুটবলারকেই ছাঁটাই করা হবে না। সেরাদের নিয়ে বাছাই দল তৈরি করা হবে। কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, দুই নামী কোচকেই ভিন্ন দায়িত্ব রাখা হবে। কারণ এই সময় অর্থের কোনও অভাব নেই। একদিকে কর্পোরেট মর্জিকেও বজায় রাখা গেল, অন্যদিকে আবার সমর্থকদের আবেগকেও প্রাধান্য দেওয়া হল।
সেক্ষেত্রে যৌথভাবে দায়িত্ব সামলাতে পারেন কিবু ও হাবাস। কিন্তু একজনকে রাখা হলে সেদিক থেকেই হাবাসই এগিয়ে।