কলকাতা: করোনা ভাইরাসের জেরে পিছিয়ে গেল টোকিও অলিম্পিক গেমস। আজ আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট টমাস বাখের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনার পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। ২০২১ সালের গ্রীষ্মে গেমস হবে বলে জানিয়েছেন আবে।
এদিকে, এই সিদ্ধান্তে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থা (আইওএ)। সংস্থার সাধারণ সচিব রাজীব মেহতা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘করোনা ভাইরাসের কারণে অলিম্পিক কমিটি এটি পিছিয়ে ভাল কাজ করেছে। এই মহামারীর কারণে অ্যাথলিটরাও ভাল করে প্রস্তুতি সারতে পারছিল না। একবছর পিছিয়ে যাওয়ায় এতে করে সুবিধে হয়েছে দেশের অ্যাথলিটদের। তারা অনেকটাই স্বস্তিতে এই খবর পেয়ে।’’
এমনকি বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) সভাপতি অজিত ব্যানার্জিও এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘এটা আমাদের কাছে খুবই ভাল খবর। আমরা চাইনি এমনভাবে গেমস পিছিয়ে যাক, কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে সামগ্রিক পরিস্থিতি ভাল নয় বিশ্বের। সেদিক থেকে অ্যাথলিটরাও মানসিকভাবে তৈরি ছিল না। আমার মনে হয় এতে করে আশঙ্কামুক্ত হয়ে অ্যাথলিটরাও নিজেদের সেরাটা দিতে পারবে।’’
উল্লেখ্য, এই বছরের ২৪ জুলাই থেকে ৯ আগস্ট পর্যন্ত টোকিওতে অলিম্পিক গেমস চলার কথা ছিল।
কিন্তু বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় গেমস স্থগিত করে দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ও জাপান সরকারের উপর চাপ বাড়ছিল। এরই মধ্যে অবশ্য গত মঙ্গলবার জাপানের অলিম্পিক মন্ত্রী সিকো হাশিমোতো দাবি করেন, নির্দিষ্ট সময়েই অলিম্পিকস অনুষ্ঠিত হবে এবং দর্শকরাও মাঠে হাজির থাকবেন। ‘অলিম্পিক টর্চ রান’ সূচি মেনে চলতে থাকে।
তবে অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা জানিয়ে দেয়, এ বছর টোকিওতে কোনও অ্যাথলিটকে পাঠানো হবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও পোল্যান্ড ২০২১ পর্যন্ত অলিম্পিক গেমস পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানায়। বিভিন্ন দেশে স্টেডিয়াম ও অ্যাকাডেমিগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অ্যাথলিটদের প্রস্তুতিও বিঘ্নিত হয়।
এই পরিস্থিতিতে আজ অলিম্পিক গেমস পিছিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হল। এর আগে বিশ্বযুদ্ধের জন্য একাধিকবার বাতিল হলেও, কোনওদিন অলিম্পিক গেমস পিছিয়ে দেওয়া হয়নি। এবারই প্রথম এই ঘটনা দেখা গেল।
গতকাল কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিক সংস্থা ইতিমধ্যেই জানিয়ে ছিল তারা অলিম্পিকে অ্যাথলিটদের পাঠাবে না। ইন্টারন্যাশনাল অ্যাথলেটিক্স সংস্থার প্রেসিডেন্ট নামী প্রাক্তন সেবাস্তিয়ান কো জানিয়েছিলেন, টোকিও অলিম্পিক বাতিল ঘোষিত করা উচিত। কেননা এই পরিস্থিতিতে আসর বসলে সেটি অ্যাথলিটদের পক্ষে ভাল হবে না।