কলকাতা: অলিম্পিক একবছরের জন্য পিছিয়ে যাওয়ায় স্বস্তিতে ভারতীয় ক্রীড়ামহল। তারা সমস্বরে জানিয়েছে এটাই এই পরিস্থিতিতে কাম্য ছিল। কারণ করোনা ভাইরাসের প্রভাব এমনভাবে বিস্তার করছে যে ক্রমে অবস্থা জটিল হয়ে যাচ্ছে।
জাপান প্রধানমন্ত্রী আভাস দিয়েছিলেন গেমস স্থগিত হয়ে যেতে পারে। টুর্নামেন্ট কমিটি এই নিয়ে আইওসি-কে জানাতে তারাও মেনে নিয়েছে অলিম্পিক একবছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
ভারতের, বিশেষ করে বাংলার নামী অ্যাথলিট ও কোচেরা সবাই মনে করছেন এটাই উপযুক্ত সময় অলিম্পিক পিছিয়ে দেওয়ার।
পি ভি সিন্ধু (ব্যাডমিন্টন) – অলিম্পিক পিছিয়ে দেওয়ার মধ্যে কোনও চমক নেই, এটা জানাই ছিল। কারণ সারা বিশ্বে যেভাবে করোনা ভাইরাসের কোপ দেখা যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে আমাদের পক্ষেও প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
সুশীল কুমার (কুস্তি) – আইওসি (আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি) আগেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারত। যদিও অলিম্পিক পিছিয়ে দেওয়া সহজ বিষয় নয়। এর সঙ্গে অনেককিছু জড়িয়ে থাকে, সব বিষয় ভেবেই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। জাপান সরকারও এই পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
জয়দীপ কর্মকার (শ্যুটিং কোচ) – আইওসি এবং জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এই পরিস্থিতিতে অলিম্পিক হলে অনেক দেশই বয়কট করত। সেটি হলে অলিম্পিকের কোনও মর্যাদা থাকত না। আমি চাই সুস্থ ও স্বাভাবিজ পরিবেশে অলিম্পিকের আয়োজন বসুক। সবাই যাতে মুক্ত মনে নিজেদের পারফরম্যান্স দেখাতে পারে। কারণ অ্যাথলিটদের অনেক পরিশ্রম ও নিষ্ঠা লুকিয়ে থাকে অলিম্পিকের পিছনে।
আমার ছাত্রী মেহুলি ঘোষের কাছেও নতুন করে অলিম্পিকের ছাড়পত্র পাওয়ার বিষয়টি এসে গেল। আগামী বছর জুলাই মাসের মধ্যে মোট পাঁচটি টুর্নামেন্ট পেয়ে যাবে। সেরকম ধারাবাহিকতা দেখাতে পারলে ওর সামনে অলিম্পিকের দরজা খুলে যেতে পারে।
স্বপ্না বর্মণ (অ্যাথলিট) – টোকিও অলিম্পিক পিছিয়ে যাওয়ায় আমার মতো অনেক অ্যাথলিট স্বস্তিতে। কারণ গেমসের চেয়েও বড় বিষয় হল আন্তর্জাতিক শান্তি। সেটি আমাদের আগে প্রয়োজন। অলিম্পিকের মতো মেগা ইভেন্টে নামতে গেলে নিজের সেরাটা দিতে হয়। এমনকি সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রেও। আমার কাছেও দারুণ একটা সুযোগ এসে গেল নতুনভাবে নিজেকে প্রমাণ করার, তৈরি করার।
করোনা ভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বের সকল অ্যাথলিটরাই এখন ঘরবন্দী, আমিও তাই। আমি যদিও কলকাতা সাই কেন্দ্রে রয়েছি, কিন্তু দারুণ সতর্কতা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে অলিম্পিক হলে অনেক দেশের অ্যাথলিটই অংশ নিত না। এই ভাবে হলেও বিষয়টি ভাল হতো না। তাই আমাদের মতো অ্যাথলিটদের কাছেও একটা বছর সময় বেড়ে যাওয়ার সামগ্রিকভাবে লাভই হল।
কুন্তল রায় (অ্যাথলেটিক্স কোচ ) – এটা ভাল সিদ্ধান্ত ও সময়োচিত বটে। অলিম্পিক পিছিয়ে দেওয়া মুখের কথা নয়। অনেক বিষয় নির্ভর করে থাকে। তবুও আইওসি এবং জাপান সরকার কঠিন সিদ্ধান্তই নিয়েছে। এই ভাইরাসের প্রভাবে সবাই ত্রস্ত, তাই অলিম্পিক পিছিয়ে দিতে অ্যাথলিটদের ভালই হবে।