কলকাতা: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization) ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসকে মহামারী হিসেবে উল্লেখ করেছে। এবার হয়তো আইপিএলেও দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলতে হবে দলগুলিকে। তেমনই এক সূত্র থেকে আভাস পাওয়া গিয়েছে।
শনিবার মুম্বইয়ে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মহারাষ্ট্র সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, আইপিএল-এর ম্যাচগুলির জন্য টিকিট বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। কেন্দ্রীয় সরকার ভিসার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করায় ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওয়া যাবে না। এই পরিস্থিতিতে আইপিএল যাতে বাতিল না হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্যই দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলার ব্যবস্থা করতে পারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
বৃহস্পতিবার এই নিয়ে সিএবি সভাপতি অভিষেক ডালমিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের কাছে এমন কোনও প্রস্তাব আসেনি। তবে সিএবি-র এই বিষয়ে কিছু করণীয় নেই। এটি একমাত্র নাইট রাইডার্স কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তবে আমাদের তরফ থেকে কোনও সহায়তা চাইলে আমরা দিতে রাজি।’’ সেক্ষেত্রে সিএবি-তে আইপিএল এবং ১৮ মার্চ আন্তর্জাতিক ম্যাচের সময় হতে পারে মেডিকেল ইউনিট। তার জন্য করোনার জন্য একটি নির্দিষ্ট চিকিৎসা কক্ষ থাকতে পারে।
সিএবি ভাবছে এই পরিস্থিতি রাজ্য সরকারেরও সহায়তা। ‘‘এটি যেহেতু বড় ধরনের ভাইরাস, তার জন্য আমরা সরকারের কাছেও এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ দাবি করছি।’’ জানালেন সিএবি সভাপতি।
আইপিএল-এর ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামে যত দর্শক যান, টেলিভিশনে খেলা দেখেন তার অনেকগুণ বেশি মানুষ। লাইভ স্ট্রিমিংও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আইপিএল থেকে আয়ের প্রাথমিক উৎস হল টিভি স্পনসর। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিও ক্রিকেটারদের জার্সি ও ট্রাউজার্সে স্পনসরদের লোগো থেকে বিপুল অর্থ পায়। ফলে খেলা দেখতে দর্শকরা স্টেডিয়ামে না এলে বিশেষ ক্ষতি হবে না। এর ফলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাও থাকবে না।
এদিকে, করোনা ভাইরাসের জেরে ভিসার বিষয়ে কড়াকড়ি করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
তার ফলে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আইপিএল-এ বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওয়া যাবে না। বিসিসিআই সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে।
সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি এ বিষয়ে সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ‘‘বুধবার রাতেই কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা পেয়েছি। মার্চের শেষে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত জানাতে পারব।’’
প্রসঙ্গত, ভারতের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটাররা ইতিমধ্যেই চলে এসেছেন। তাঁরা যে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলির হয়ে আইপিএল-এ খেলবেন, সেই ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি চেষ্টা করছে, সংশ্লিষ্ট ক্রিকেটাররা যেন এই সিরিজ শেষ হওয়ার পর দেশে না ফিরে যান। তাহলে তাঁদের আইপিএল-এ খেলতে বাধা থাকবে না। ভিসা নিয়েও জটিলতা থাকবে না।
উল্লেখ্য, ভারতে এখনও পর্যন্ত অন্তত ৬০ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কূটনৈতিক বা চাকরি সংক্রান্ত ছাড়া বাকি সব ভিসা বাতিল করা হচ্ছে।
এর ফলেই আইপিএল-এ বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওয়া যাবে না। এবারের আইপিএল আদৌ হবে কি না, বা দর্শকদের মাঠে প্রবেশাধিকার থাকবে কি না, সে বিষয়ে শনিবার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের বৈঠকে।