মুম্বাই: ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) ধারাভাষ্যকার প্যানেল থেকে বিতাড়িত হওয়ার পরে প্রথম মুখ খুললেন সঞ্জয় মঞ্জরেকার।
ভারতের নামী প্রাক্তন ব্যাটসম্যান বলেছেন, ‘‘আমি সবসময় ধারাভাষ্যকে আলাদা সম্মান হিসেবে বিবেচনা করে এসেছি। আমাকে বাছা হবে কিনা, সেটি আয়োজকদের বিষয়। আর ওদের সিদ্ধান্ত আমি সবসময় মেনে চলব। হয়তো বিসিসিআই আমরা পারফরম্যান্সে খুশি নয়। আর সেটা পেশাদার হিসেবে মেনে নেওয়াই আমার কাজ।’’
মঞ্জরেকার সাধারণত যে কোনও বিষয়ে চরম প্রতিক্রিয়া দিয়ে থাকেন। কিন্তু বোর্ডের প্যানেল থেকে বাদ যাওয়ার পরেও তাঁর এই কূটনৈতিক বক্তব্যও বেশ সমাদৃত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞমহল মনে করছেন, সঞ্জয় এই ধরনের মন্তব্য করে আগামী দিনে ধারাভাষ্যকার হিসেবে ফেরার কাজটিও সমানভাবে করে রাখলেন।
কিন্তু সবথেকে বড় কারণটি হল মঞ্জরেকার কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে স্থান নিয়ে বোর্ডের বিরাগভাজন হয়েছেন।
তিনি জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী আন্দোলনের হয়ে সওয়াল করেছিলেন, এমনকি বিরোধিতা করেছিলেন তাদের ওপর আক্রমণেরও। ট্যুইট করে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ৫৪ বছর বয়সী এই প্রাক্তন স্টাইলিশ ব্যাটসম্যান কেন্দ্রের সিএএ (Citizenship amendment act) নীতির বিপক্ষে কথা বলেছিলেন।
মঞ্জরেকারের বাদ যাওয়ার ঘটনাটি যে বেশ আলোড়ন ফেলেছিল, তা বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির কথাতেই ধরা পড়েছে। সৌরভ বলেছেন, সঞ্জয়ের বাদ যাওয়ার বিষয়ে বিতর্কের কোনও অবকাশ নেই। কোনও ধারাভাষ্যকর কোনও একটি সিরিজ থেকে বাদ যেতেই পারেন। তার মানে এই নয় যে আর কোনওদিন তিনি সুযোগ পাবেন না। এটা খুব স্বাভাবিক বিষয়।’’
উল্লেখ্য, শনিবারই বিবিসিআইয়ের ধারাভাষ্যকরের প্যানেল থেকে বাদ বিসিসিআইয়ের দেওয়া হয়েছিল মঞ্জরেকরকে। আগামী আইপিএলেও তাঁকে কমেন্ট্রি বক্সে দেখা যাবে না।
অনেকেরই ধারণা, মঞ্জরেকার সবসময় বেঁফাস মন্তব্য করে খবরের মধ্যে থাকতে চান। সেই কারণেই রবীন্দ্র জাদেজা নিয়েও বেচাল কথা বলে সকলেরই বিরাগভাজন হয়েছিলেন।
তিনি জাদেজাকে সাধারণ গড়পড়তা ক্রিকেটার বলে কটাক্ষ করেছিলেন। তারপরেই জাদেজা দারুণ একটি ইনিংস খেলে সঞ্জয়কে জবাবও দিয়েছিলেন। এমনকি হর্ষ ভোগলেকে তিরষ্কার করেও বোর্ডের কুনজরে এসেছিলেন। ভোগলেকে বলেছিলেন, ‘‘আপনি যেহেতু পেশাদার ক্রিকেট খেলেননি, সেই জন্যই অনেক নিয়মকানুন আপনার অজানা!’’
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে ক্রিকেটকে গুডবাই জানানোর পরে মঞ্জরেকার পেশা হিসেবে ধারাভাষ্যকে বেছে নেন। তিনি তিনটি বিশ্বকাপে সাফল্যের সঙ্গে ধারাভাষ্য দেন।