কলকাতা : রঞ্জি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন সেই অধরাই থেকে গেল বাংলার। ৩০ বছর পরে ফের রঞ্জি খেতাব হওয়ার আশা ছিল। কিন্তু কাপ ও ঠোঁটের মধ্যে যে যোজন খানিক দুরত্ব, সেটি আবারও প্রকট হয়েছে।
বাংলার প্রথম ইনিংসে লিড-এর জন্য প্রয়োজন ছিল ৭১ রানের। কিন্তু শুক্রবার লাঞ্চের আগেই বাংলা অলআউট হয়ে গিয়েছে ৩৮১ রানে। আর তাতেই সব স্বপ্নের সলিলসমাধি। ৪৪ রানে এগিয়ে থেকে সৌরাষ্ট্র প্রথমবার রঞ্জি খেতাব অর্জন করল।
শুক্রবার ম্যাচের শেষ দিন যে আশার আলো নিয়ে ব্যাটিং শুরু করেছিলেন অনুষ্টুপ মজুমদার ও অর্ণব নন্দী, তা খেলা শুরুর ৮ বলের মধ্যেই ঘোর অন্ধকারে পরিণত হয়। জয়দেব উনাদকাটের এক ওভারেই খেলা রং বদলায়। ৬৩ রানে জয়দেব উনাদকাটের বলে অনুষ্টুপের এলবিডব্লুউ হয়ে ফিরে যাওয়া। আর তারপর আকাশ দীপের রানআউট। ডানহাতি পেসার আউট হলেন শিক্ষানবিশদের মতো। তখনই বোঝা গিয়েছিল, আর বাংলা পারবে না, পারেওনি।
১৬ বল টিকে ছিলেন মুকেশ কুমার। কিন্তু তাতে কাজের কাজ হয়নি। ব্যাট হাতে অর্ণব লড়েছেন ঠিকই, তবে নায়ক হয়ে ফিরতে পারেননি। তিনি ৪০ রানে অপরাজিত থাকলেও ঈশান পোড়েলের উইকেট পড়তেই প্রথমবার সৌরাষ্ট্রের রঞ্জি জয়ের ইতিহাস লেখা হয়ে যায় রাজকোটে।
প্রসঙ্গত, রাজকোটে টসে জিতে প্রথম ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন সৌরাষ্ট্রের অধিনায়ক জয়দেব উনাদকাট। প্রথম ইনিংসে বাংলার বিরুদ্ধে ৪২৫ রান তোলে সৌরাষ্ট্র। সুদীপ চ্যাটার্জি (৮১), ঋদ্ধিমান সাহা (৬৪) লড়াকু ইনিংস খেললেও শেষ হাসি হাসেন পূজারা, উনাদকাটরাই।
প্রসঙ্গত, গত আট বছরে এটা নিয়ে চারবার রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল খেলছে সৌরাষ্ট্র। গত মরসুমে ফাইনালে উঠে বিদর্ভের কাছে হেরেছিল তারা। অন্যদিকে, ২০০৬-০৭ মরসুমে শেষবার ফাইনালে উঠেছিল বাংলা। তারা মোট ১১ বার ফাইনালে খেলেছে। শেষবার বাংলা রঞ্জি জিতেছিল ১৯৮৯-৯০ মরসুমে। সেবার দলে ছিলেন বাংলার কোচ কাম মেন্টর অরুণ লাল। তিনি এবার খেতাব জিতলে ক্রিকেটার ও কোচ হিসেবে মুকুট অর্জনের অসামান্য কৃতিত্ব অর্জন করতেন। এমনকি মনোজ তিওয়ারি একমাত্র বাংলার ক্রিকেটার, যিনি মোট তিনবার ফাইনালে উঠেও খেতাব পেলেন না।
বাংলা কোচ দিনের শেষে হতাশভাবে জানিয়েছেন, এই বাংলা দলের প্রতিভার অভাব ছিল না। কিন্তু কী করা যাবে, ওরা বেশি মানসিকতা দেখিয়ে ট্রফি নিয়ে চলে গেল। বুক চিতিয়ে লড়াইয়ের সেই জমি পেল না ছেলেরা। দল হারলেও আমি ওদের নিয়ে যে আসতে পেরেছি, তাও ভাল লাগছে। যদিও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বাংলার কোচ হিসেবে অরুণ লাল আর কাজ চালাবেন কিনা। কারণ অসুস্থ শরীরেও তিনি দলের জন্য এতটা খেটেছিলেন, তার মূল্য শেষমেশ পেলেন না।